জাতীয়

খুলনা-ঢাকা রুটে ট্রেন চলাচল শুরু” পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকায় পৌছাবে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস।

শহিদুল্লাহ্ আল আজাদ.

স্টাফ রিপোর্টারঃ

 

খুলনা-ঢাকা রুটে ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ভোর থেকে চালু হয়েছে নতুন ট্রেন ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’। পদ্মা সেতু হয়ে নতুন রুটে সময় লাগছে মাত্র পৌনে ৪ ঘণ্টা। দূরত্ব, যাতায়াতের সময় ও ভাড়া কম হওয়ায় রেলওয়ের এই উদ্যোগে খুশী যাত্রীরা। খুলনা থেকে অন্য ৩টি ট্রেনে অন্য রুটে ঢাকায় যেতে সময় লাগে ৭ থেকে ১০ ঘণ্টা। এদিকে শীতকালে নতুন এই ট্রেন ছাড়ার সময়সূচি ভোর ৬টার পরিবর্তে ৭টায় করার দাবি জানিয়েছেন কেউ কেউ।

খুলনা রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোর ৬টায় খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেন। ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছায় সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে। এটি আবার রাত ৮টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে রাত ১১টা ৪০ মিনিটে খুলনায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। প্রথম দিন খুলনা থেকে ৫৫৩ জন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায় ট্রেনটি।রেলওয়ের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা খুলনা থেকে ট্রেনে করে ঢাকায় যান। তবে খুলনা প্রান্তে ছিল না কোনো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।

 

প্রথম দিনের যাত্রী লিয়াকত হোসেন বলেন, নতুন রুটে দূরত্ব কমে যাওয়ায় এখন যাতায়াতে সময় কম লাগবে। এছাড়া ভাড়াও কম লাগবে। এতে আমরা খুশী। তবে আরেক যাত্রী হামিদ শেখ বলেন, শীতকালে ট্রেন ছাড়ার সময়সূচি ভোর ৬টার পরিবর্তে ৭টায় করলে ভালো হয়। কারণ শীতকালে ভোর ৬টায় অন্ধকার থাকে। ট্রেনে যাওয়ার জন্য আমি ভোর সোয়া ৫টায় বাসা থেকে বের হই। এরপর স্টেশনে আসার জন্য রিকশা পেতে অনেক সময় লেগেছে। এছাড়া ছিনতাইকারীর কবলে পড়ি কিনা সেই আতঙ্কের মধ্য দিয়ে এসেছি।

 

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন জানান, বিদেশ থেকে ট্রেনের নতুন ইঞ্জিন ও বগি আনা হচ্ছে। ৬ মাস পর এই রুটে নতুন আরও ট্রেন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এদিকে সোমবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৬ দিন ট্রেনটি চলাচল করবে। ট্রেনটি যাওয়া-আসার পথে যশোরের নওয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া জংশন, নড়াইল, লোহাগড়া, কাশিয়ানী জংশন ও ভাঙ্গা জংশন স্টেশনে যাত্রা বিরতি করবে। খুলনা রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার আশিক আহমেদ জানান, ট্রেনটিতে মোট ১২টি বগি রয়েছে। এর মধ্যে ১১টি যাত্রীবাহী ও ১টি পণ্যবাহী। ১১টি বগিতে আসন সংখ্যা ৭৬৮টি। এই রুটের দূরত্ব ৩৭৮ কিলোমিটার।

 

খুলনা-ঢাকা রুটে শোভন চেয়ার শ্রেণির ভাড়া ভ্যাট ছাড়া ৪৪৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ভাড়া ৭৪০ টাকা, এসি সিট শ্রেণির ভাড়া ৮৮৫ টাকা এবং এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া ১ হাজার ৩৩০ টাকা। খুলনা রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, খুলনা-ঢাকা রুটের সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চিত্রা এক্সপ্রেস ও নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস মেইল ট্রেন আগের নিয়মেই চলাচল করবে।মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৬ দিন রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে ১৪টি বগি নিয়ে ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস’ ট্রেন খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। পোড়াদহ, ফরিদপুর, রাজবাড়ি, ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ৮ ঘণ্টা। সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া শোভন চেয়ার শ্রেণি ৬২৫ টাকা, স্নিগ্ধা ১ হাজার ১৯৬ টাকা, এসি সিট ১ হাজার ৪৩২ এবং এসি বার্থ ২ হাজার ১৫১ টাকা। চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন রোববার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৬ দিন সকাল ৯টায় ১৪টি বগি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

 

যমুনা সেতু দিয়ে ঢাকায় পৌঁছাতে সময় লাগে ১০ ঘণ্টা। চিত্রা ট্রেনের ভাড়া শোভন চেয়ার শ্রেণি ৬৩০ টাকা, স্নিগ্ধা ১ হাজার ২০৮ টাকা, এসি সিট ১ হাজার ৪৪৯ টাকা ও এসি বার্থ ২ হাজার ১৬৮। নকশীকাঁথা ট্রেনটি ৫টি বগি নিয়ে প্রতিদিন রাত ১১টায় খুলনা থেকে ছেড়ে যায়। পোড়াদহ, ফরিদপুর, রাজবাড়ি, ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ৭-৮ ঘণ্টা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button